তেলাওয়াতে সিজদা কিভাবে দিতে হয় | তেলাওয়াতে সেজদা কয়টি
মুসলমানদের পবিত্র কোরআন মাজিদে এমন কিছু আয়াত রয়েছে, যেগুলো তেলাওয়াত করলে বা শুনলে মুমিন পাঠক ও শ্রোতাদেরকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সেজদা করতে হয়। এই সেজদা কে সেজদাহে তেলাওয়াত বলা হয়ে থাকে। যদি তেলাওয়াত শব্দ করে অথবা নিঃশব্দেও পড়ে থাকেন তাহলেও সিজদা করতে হবে।
![]() |
মসজিদ |
তবে একই আয়াত যদি বারবার পড়া হয়ে থাকে তাহলে তেলাওয়াত শেষে সিজদা একবার করলেই হবে। তেলাওয়াতে সিজদা করার নিয়ম বা তেলাওয়াতের সিজদা কিভাবে দিতে হয় এই বিষয়ে ধারণা দেওয়া হলোঃ
তেলাওয়াতে সিজদা কেন করতে হয়?
তেলাওয়াতের সিজদা যে ব্যক্তি পাঠ করে থাকে তাকে অবশ্যই সেজদা করতে হয়। তাছাড়া যে ব্যক্তি শুনে থাকে তাকেও সেজদা করতে হয়।কেননা তেলাওয়াতে সেজদাকে ওয়াজিব করা হয়েছে।তাই তেলাওয়াতে সেজদা যদি কেউ শুনে থাকেন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে না পড়ে থাকেন তাহলে তার পাপ হবে। আর কেউ যদি কারো তেলাওয়াতে সেজদার আয়াত শুনে থেকে পড়ে থাকেন তাহলে তার ওপর ওয়াজিব হবে।
তেলাওয়াতে সেজদা করার নিয়ম?
তেলাওয়াতের সেজদার পদ্ধতি হলো হাত না উঠিয়ে দাঁড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সোজা সেজদায় চলে যেতে হবে। তারপর সুবহানা রাব্বিয়াল আলা তিনবার পড়ে আল্লাহ আকবর বলে দাঁড়াতে হবে। তখন সিজদা মাত্র একটি হবে। এতে তাশাহুদ নেই, সালাম ও নেই।এই সেজদার জন্য নামাজরত ব্যক্তিকে হাত উঠাতে বা হাত বাঁধতে হবে না এবং দুটি সেজদাও করা লাগবে না। যদি কেউ না দাঁড়িয়ে বসে বসে সেজদা করে অথবা সেজদা করে বসে থাকে তাও ওয়াজিব হবে। পুরুষদের ক্ষেত্রে আল্লাহু আকবার জোর করে বলাটা উত্তম।
তেলাওয়াতের সেজদা যে ইচ্ছাকৃতভাবে শুনে থাকুক বা অন্য কাজে নিয়োজিত থাকা অবস্থায় শুনে থাকুক তার ওপর অবশ্যই সেজদা করা ওয়াজিব। এই কারণে সেজদার আয়াত তেলাওয়াত কালে চুপে চুপে তেলাওয়াত করাটা ভালো, এতে করে ওপর কোন ব্যক্তি অসুবিধায় পড়বে না।
নামাজের সেজদা যেভাবে আদায় করা হয়ে থাকে তেলাওয়াতের সেজদাও ঠিক একই ভাবে আদায় করতে হয়। অনেকে কোরআনে কারিমের উপর সেজদা করে থাকেন, এতে করে সেজদা আদায় হবে না।
তেলাওয়াতে সেজদা কয়টি?
কুরআনে মোট ১৪ টি সেজদার আয়াত রয়েছে। কোরআনের ১৪টি আয়াত যদি কেউ পড়ে থাকেন অথবা শুনে থাকেন তাহলে তার ওপর তেলাওয়াতের সেজদা ওয়াজিব হয়ে যায়।তেলাওয়াতে সেজদার ১৪টি আয়াতের মধ্যে রয়েছেঃ১. সুরা আরাফ, আয়াত ২০৬
২. সূরা রাদ, আয়াত ১৫
৩. সূরা নাহল, আয়াত ৪৯
৪. সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত ১০৯
৫. সূরা মারইয়াম, আয়াত ৫৮।
৬. সূরা হজ্জ আয়াত ১৮
৭. সূরা ফোরকান আয়াত ৬০
৮. সূরা নামল আয়াত ২৬
৯. সূরা সিজদা আয়াত ১৫
১০. সূরা সাদ, আয়াত ২৫
১১. সূরা হা মিম সিজদা, আয়াত ৩৮
১২. সূরা নাজম আয়াত ৬২
১৩. সুরা ইনশিকাক আয়াতে ২১
১৪. সূরা আলাক আয়াত ১৯
শেষ কথা, ইতিমধ্যে তেলাওয়াতের সেজদা পড়ার নিয়ম বা তেলাওয়াতে সেজদা কেন করতে হয় এই বিষয়ে মোটামুটি জানা হয়ে গিয়েছে। তাই অবশ্যই সঠিক নিয়মে তেলাওয়াতে সেজদা পালন করে ওয়াজিব ইবাদাত কায়েম করুন।