কিতাব শব্দের অর্থ কি | আসমানি কিতাব কয়টি ও কি কি | আসমানি কিতাবে বিশ্বাসের গুরুত্ব

কিতাব শব্দের অর্থ কি?

কিতাব শব্দের অর্থ লিপিবদ্ধ বা লিখিত বস্তু৷ এর প্রতিশব্দ হল গ্রন্থ, পুস্তক, বই ইত্যাদি৷

আসমানি কিতাব কাকে বলে?

আসমানি কিতাব হল এমন গ্রস্থ যা আল্লাহ তায়ালা থেকে অবতীর্ণ হয়েছে৷ ইসলামি পরিভাষায় যেসব আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির হিদায়তের জন্য নিকনির্দেশনা স্বরূপ নাজিল করেছেন তাকে আসমানি কিতাব বলে৷ অন্যকথায় আল্লাহ তায়ালার বাণী সম্বলিত গ্রন্থাবলিক আসমানি কিতাব বলা হয়৷ 

কুরআন
কুরআন

সুতরাং আসমানি কিতাব হল আল্লাহর বণীসমষ্টি৷ আল্লাহ তায়ালা জিবরাইল (আ.) এর মাধ্যমে তাঁর বাণী রাসুলগণের নিকট প্রেরণ করেছেন৷ অতঃপর নবি রাসুলগণ তা মানুষের নিকট পৌঁছে দিয়েছেন৷

আসমানি কিতাবের বিষয়বস্তু?

আল্লাহ তায়ালা আসমানি কিতাবসমূহে নানা বিষয়ের আলোচনা উপস্থাপন করেছেন৷ যেমনঃ
  • আল্লাহ তায়ালার সত্তাগত পরিচয়৷
  • আল্লাহ তায়ালার গুণাবলির বর্ণনা৷
  • নবি রাসুলগণের বর্ণনা৷
  • পূর্ববতী জাতিসমূহের বিবরণ৷
  • অবাধ্য ও কাফিরদের পরিণতির বিবরণ৷
  • হালাল হারামের বর্ণনা৷
  • বিধি বিধান সংক্রান্ত বিবরণ৷
  • শাস্তি ও সতর্কীকরণ বিষয়ে আলোচনা৷
  • উপদেশ ও সুসংবাদ সম্পর্কে বিবরণ৷
  • আকিদা সংক্রান্ত বিষয়সমূহের বিবরণ৷ 
  • পরকাল সংক্রান্ত বিষয়সমূহের বিবরণ ইত্যাদি৷

আসমানি কিতাব কয়টি ও কি কি?

আল্লাহ তায়ালা সর্বমোট ১০৪ খানা আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন৷ এর মধ্যে ৪ খানা বড় ও প্রসিদ্ধ রাসুলের উপর নাজিল হয়৷ এগুলো হলঃ
  • তাওরাত হযরত মুসা (আ.) এর উপর নাজিল হয়েছে৷
  • যাবুর হযরত দাউদ (আ.) এর উপর নাজিল হয়েছে৷
  • ইঞ্জিল হযরত ঈসা (আ.) এর উপর নাজিল হয়েছে৷
  • কুরআন বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর উপর নাজিল হয়েছে৷
আর ১০০ খানা সহিফ মোট চারজন নবির উপর নাজিল হয়৷ এঁরা হলেনঃ
  • হযরত আদম (আ.) তাঁর উপর ১০ খানা সহিফা নাজিল হয়েছে৷
  • হযরত শিস (আ.) তাঁর উপর ৫০ খানা সহিফা নাজিল হয়েছে৷
  • হযরত ইবরাহিম (আ.) তাঁর উপর ১০ খানা সহিফা নাজিল হয়েছে৷
  • হযরত ইদরিস (আ.) তাঁর উপর ৩০ খানা সহিফা নাজিল হয়েছে৷

আসমানি কিতাবে বিশ্বাসের গুরুত্ব?

আসমানি কিতাবসমূহের বিশ্বাস স্থাপন করা ইমানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ আসমানি কিতাবসমূহে বিশ্বাস স্থাপন না করলে ইমানের মূল বিষয়ই নড়বড়ে যায়৷ কেননা অসমানি কিতাবগুলোর মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহ তায়ালা নবি রাসুল ফেরেশতা পরকাল ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পেয়েছে৷ এসব বিষয় সম্পর্কে পবিত্র আল কুরআনের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি৷ 

যদি কেউ আসমানি কিতাবসমূহে ও তাতে বর্ণিত বিষয়সমূহে অবিশ্বাস করে তবে স্বভাবতই সে ইমানের অন্যান্য বিষয়হগুলোও অস্বীকার করে৷ সুতরাং ইমান আনার জন্য আসমানি কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা অপরিহার্য৷ অন্যথায় পূর্ণ মুমিন হওয়া যায় না৷ আসমানি কিতাবসমূহ হল সকল জ্ঞান ও বিজ্ঞানের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস৷ 

এর মাধ্যমেই আমরা সৃষ্টিজগৎ মানবসৃষ্টি পরকাল ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারি৷ মানব জীবনে চলার পথ সম্পর্কে সঠিক দিকনির্দেশনা আসমানি কিতাবসমূহেই পাওয়া যায়৷ আসমানি কিতাবসমূহে বিশ্বাসই এসব বিষয়কে আমাদের বাস্তবজীবনে অনুশীলন অনুপ্রেরণা দেয়৷
Next Post Previous Post