বর্তমানে কত টাকা থাকলে যাকাত ফরজ হয়

মুসলমানদের জন্য যাকাত দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঈমানের পর সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য ইবাদত হচ্ছে যাকাত। পবিত্র কুরআন মাজিদে যাকাত দেওয়ার আদেশ করা হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোণে যাকাত ফরজ করা হয়েছে।
যাকাত
যাকাত

কিন্তু যাকাত কাদের ওপর ফরজ বা যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি এই নিয়ে অনেকের ভিতরে মতাভেদ রয়েছে। তাই এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা খুবই জরুরী। 

যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি?

যাকাত ফরজ হওয়ার মোট ছয়টি শর্ত রয়েছে। নিচে যাকাত ফরজ হওয়ার শর্তাদি সমূহ পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলোঃ

১. যারা নিসাব পরিমাণ মালের মালিক তাদের উপর যাকাত ফরজ। অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ, সাড়ে ৫২ তলা রুপা, অথবা সমপরিমাণ মূল্যের নগদ টাকা বা মালের মালিক হওয়া।

২. প্রত্যেক মুসলমানের উপর যাকাত ফরজ কোন কাফেরের যাকাত দেওয়া লাগবে না। 

৩. জ্ঞানী ও বিবেক সম্পূর্ণ মানুষ ছাড়াও একজন পাগল মুসল্লী ও যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে যায় তাহলেও তাকে যাকাত দেওয়া লাগবে। 

৪. নিসাব পরিমাণ মাল বা নিসাব পরিমাণ সম্পদ যদি এক বছর পর্যন্ত থেকে থাকে এবং এক বছর স্থায়ী হয়ে যায় তাহলে যাকাত দেওয়া লাগবে। 

যাকাত কাদের উপর ফরজ?

একজন মুসলমান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়ে গেলে অবশ্যই তাকে যাকাত দিতে হবে। কেননা ইসলামের দৃষ্টিকোনে যাকাত হচ্ছে মুসলমানদের জন্য ফরজ।

যাকাত দেওয়ার জন্য কোন মুসলমান যদি যোগ্য হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই তাকে যাকাত দিতে হবে না হলে গুনাহ হবে। ইসলামের অনুসারী নয় বা কোন কাফেরের উপর যাকাত ফরজ করা হয়নি। 

কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ?

কোন কোন সম্পদের উপর যাকাত ফরজ এই বিষয়ে অবশ্যই প্রত্যেক মুসলমানের জানা উচিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর মোঃ হারুনুর রশিদের মতে, হাতে গচ্ছিত নগদ অর্থ, প্রাইজ বন্ড ও সার্টিফিকেট সমূহ, সোনা ও রুপা, উৎপাদিত কৃষিজাত ফসল, পশু সম্পদের মধ্যে ৪০টি উপরে ছাগল ও ভেড়া, ৩০ টির উপরে গরু মহিষ ও অন্যান্য গবাদি পশু, খনিজ দ্রব্য সহ প্রফিডেন্ট ফান্ডের সবকিছুই হচ্ছে যাকাত দেওয়ার উপর ফরজ।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে সোনা রুপা, ব্যাংকে সঞ্চয়কৃত টাকা, হজ ঘর বাড়ি ও বিয়ের জন্য জমানো অর্থ, ব্যবসার জন্য ক্রয় ক্রৃত জিনিস, দোকানপাটের বাণিজ্যিক পণ্য, বার্ষিক বাড়ি ভাড়া এই সকল কিছুর ওপরে যাকাত ফরজ।

যাকাত কত টাকা হলে দিতে হবে?

কত টাকা হলে যাকাত দিতে হবে এই বিষয়ে অনেকেরই সুস্পষ্ট ধারণা নেই। অনেক মুসলমান ব্যক্তি যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রে সোনা ও রুপার মূল্য হিসেবে টাকা যাকাত দিয়ে থাকেন। ধরুন আপনার কাছে ৫০ লাখ টাকা রয়েছে।

তাহলে এটা কে সোনার হিসাবে পরিমাপ করে ফেলুন। অর্থাৎ ৫০ লাখ টাকায় কত ভরি সোনা হচ্ছে সেটি হিসাব করে বের করে ফেলুন। যদি পঞ্চাশ লাখ টাকায় সোনা নিসাব পরিমাণ হয়ে যায় তাহলে ১,২৫০০০ টাকা যাকাত দিতে হবে টাকার হিসেবে।

যেহেতু এক লক্ষ টাকায় ২৫০০ টাকা যাকাত দিতে হয় তাই এখানে ২.৫ শতাংশ হারে হিসাব করা হয়েছে। তবে বর্তমানে কত টাকা হলে যাকাত দেওয়া এই বিষয়ে হয়তো এখনো সুস্পষ্ট ধারণা পাননি। যদি সোনার হিসেবে যাকাত দিয়ে থাকেন। 

তাহলে এখন এক ভরি সোনার দাম ৯৯ হাজার টাকা। তাহলে ৭.৫০ ভরি সোনার দাম হচ্ছে 749,250 টাকা। অর্থাৎ আপনার কাছে যদি এই পরিমাণ টাকা থেকে থাকে তাহলে আপনার উপর যাকাত ফরজ হয়ে গিয়েছে। 
Next Post Previous Post