মুসলিম মনীষী কি?

মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর নিকট ওহির সূচনা হল اِقْرَاْ ইকরা (আপনি পড়ুন) শব্দ দিয়ে৷ এজন্য ইসলাম শিক্ষায় প্রশিক্ষণ জ্ঞান ও জ্ঞানীদের অনেক মর্যাদার কথা রয়েছে৷ আল কুরআনকে বলা হয়েছে হাকিম (বিজ্ঞানময়)। মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেন প্রত্যেক মুসলমানের উপর জ্ঞান অন্বেষণ করা ফরজ৷ (ইবনে মাজাহ)

শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) মক্কায় দারুল আরকাম নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন৷ মদিনায় হিজরতের পর মসজিদে নববির বারান্দায় ৭০ জন শিক্ষার্থীর সমন্বয়ে সুফফা নামে একটি শিক্ষায়তন গড়ে তোলেন৷ মক্কা বিজয়ের পর মসজিদে নববি জ্ঞানচর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে৷ 
মুসলিম মনীষী
মুসলিম মনীষী

সেখানে সুদূর পারস্য রোম কুফা বসরা বাগদাদ সিরিয়া ও মিসর থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জ্ঞানের জ্ঞান ভিড় জমাত৷ জ্ঞানার্জন ও জ্ঞান বিস্তারের জন্য মহানবি (স.) তাঁর সাহাবিদের বিভিন্ন দেশে পাঠাতেন৷ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর ইন্তিকালের পর তাঁর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে মুসলমানগণ জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চাকে আরও মহিমান্বিত করে তোলেন৷ জ্ঞানের প্রদীপ বিভিন্ন দেশে প্রজ্বলিত করেন৷ 

প্রতিষ্ঠা করেন অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পাঠাগার৷ আব্বাসি খলিফা মামুন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বাইতুল হিকমার মাধ্যমে পৃথিবীতে বিভিন্ন ভাষায় রচিত বইগুলো আরবিতে অনুবাদ করা হয়৷ শাসকদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার ফলে ইতিহাস চিকিৎসা জ্যোতির্বিদ্যা পদার্থ রসায়ন ও গণিতশাস্ত্রে মুসলিম মনীষীগণ বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হন৷ 

ফলে মুসলিমগণ জ্ঞান ও বিজ্ঞানের স্বর্ণশিখরে আরোহণ করেন৷ শিক্ষা ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবদানের কথা মানব ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে৷ মুসলমানগণ হাদিস তাফসির ফিকাহ ইতিহাস ও দর্শন প্রভৃতি শাস্ত্রেও অবিস্মরণীয় অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছেন৷ 

হাদিস শাস্ত্রে ইমাম বুখারি (র.) ফিকাহ শাস্ত্রে ইমাম আবু হানিফা (র.) দর্শনশাস্ত্রে ইমাম গাযালি (র.) ও তাফসির শাস্ত্রে ইমাম ইবনে জারির আত তাবারির (র.) অবদান সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য৷
Next Post Previous Post
banner