ভূগোল শাস্ত্র কি | ভূগোল শাস্ত্রে মুসলমানদের অবদান

ভূগোল শাস্ত্র কি?

অজানাকে জানার আকাঙ্ক্ষা এবং বিস্তৃত এলাকার লোকদের কেবলা নির্ধারণসহ নানা প্রয়োজনে মানচিত্রের খুব প্রয়োজন দেখা দেয়৷ ইসলাম প্রচারক ও বণিকগণের জন্য দেশ দেশান্তর ভ্রমণ করার তাগিদে ভূগোলের জ্ঞান অর্জনের খুব প্রয়োজন হয়৷ 
ভূগোল শাস্ত্র
ভূগোল শাস্ত্র

আর এই প্রয়োজন মেটানোর জন্য আল মোকাদ্দাসি আল মাসুদি ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ ও ইবনে খালদুনসহ অনেক মুসলিম মনীষী ভূগোলশাস্ত্রে অসামান্য অবদান রাখেন৷

ভূগোল শাস্ত্রে মুসলমানদের অবদান?

নিচে ভূগোল শাস্ত্রে অবদানের জন্য যেসব ব্যক্তি অবদান রেখেছে তাদের নাম উল্লেখ করা হলঃ
  • আল মোকাদ্দাসি
  • আল মাসুদি
  • ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ
  • ইবনে খালদুন

আল মোকাদ্দাসি

তাঁর নাম মুহাম্মদ পিতার নাম আহমাদ৷ তিনি ৯৪৬ খ্রি. বাইতুল মোকাদ্দাস এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন তাই আল মোকাদ্দাসি নামে পরিচিত৷ তিনি একজন বিখ্যাত পরিব্রাজক ও ভূগোলবিদ ছিলেন৷ তিনি স্পেন ভারতবর্ষ ও সিজিস্তান ব্যতীত সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ভ্রমণ করেন৷ 

দীর্ঘ বিশ বছরের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি ৯৮৫ পৃষ্ঠার একটি গ্রন্থ রচনা করেন৷ তাঁর গন্থের নাম হল আহসানুত তাকাসিম ফি মারিফাতুল আকালিম৷ এই মনীষী ১০০০ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তিকাল করেন৷

আল মাসুদি

তাঁর নাম আবুল হাসান আলি বিন হুসাইন আল মাসুদি৷ তিনি বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন৷ তিনি একাধারে পরিব্রাজক ইতিহাসবিদ ও ভূগোলবিদ ছিলেন৷ তিনি তাঁর ঐতিহাসিক ভূগোল বিশ্বকোষ এ তাঁর  ভ্রমণসমূহের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন৷ তিনি পৃথিবীর মানচিত্র অঙ্কন করেন৷ পৃথিবীর আকার আয়তন গতি ও প্রধান প্রধান বিভাগগুলোর বিবরণ দেন৷ 

ভারত মহাসাগর পারস্য সাগর সাগরের ঝড়ের অবস্থার কথা তিনি উল্লেখ করেন৷ ৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভূকম্পন বিষয়ে একটি প্রবন্ধ লিখেন৷ তিনি ৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে মিসরে ইন্তেকাল করেন৷

ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ

ইয়াকুত ইবনে আব্দুল্লাহ আল হামাবি পারস্যে জন্মগ্রহণ করেন৷ তাঁর মুজামুল বুলদান নামক গ্রন্থখানি ভূগোলশাস্ত্রের এক প্রামাণ্যগ্রন্থ৷ এতে তিনি প্রত্যেক স্থানের ঐতিহাসিক জাতিতাত্ত্বিক ও প্রাকৃতিক বিষয়ের বিবরণ দিয়েছেন৷ ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের পরিচয় ও ঘটনাসমূহ উল্লেখ করেছেন৷ তিনি ১২২৮ খ্রিষ্টাব্দে বাগদাদে ইন্তিকাল করেন৷

ইবনে খালদুন

তাঁর নাম আব্দুল রহমান পিতার নাম মুহাম্মদ৷ তিনি ইবনে খালদুন নামে পরিচিত৷ তিনি ১৩৩২ খ্রি. তিউনিসিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন৷ তাঁর বিশ্বজোড়া খ্যাতির মূলে ছিল তাঁর ভূগোল বিষয়ক গ্রন্থ কিতাব আল ইবার ওয়া দিওয়ান আল মুবতাদা ওয়াল খাবার ফি আইয়াম আল আরাব ওয়াল আযম ওয়া বারবার এটি সংক্ষেপে আল মুকাদ্দিমা নামে পরিচিত৷ 

এই গ্রন্থে ভূগোল বিষয়ে তিনি যেসব তত্ত্ব ও তথ্যের অবতারণা করেছেন তা তাঁকে ভূগোলশাস্ত্রে অমরত্ব দান করছে৷ তিনি ১৪০৬ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তিকাল করেন৷ 
Next Post Previous Post