জিহাদ কি | জিহাদের গুরুত্ব ও ফজিলত

জিহাদ (اَلْجِهَادُ) কি?

জিহাদ আরবি শব্দ৷ এর আভিধানিক অর্থ পরিশ্রম সাধনা কষ্ট চেষ্ট ইত্যাদি৷ আর ইসলামি পরিভাষায় জান মাল ইলম আমল লেখনী ও বৃক্তৃতার মাধ্যমে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় আল্লাহর দীনকে (ইসলামকে) সমুন্নত করাই হল জিহাদ৷
মসজিদ
মসজিদ

অনেকেই জিহাদ বলতে রক্তপাত ও কতল (হত্যা) বোঝেন৷ এটা সঠিক নয়৷ কেননা জিহাদ একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ৷ পৃথিবীর যা কিছু উত্তম তাতেই আল্লাহর সন্তুষ্টি৷ আর আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই শুধু জিহাদ হতে পারে৷ আল্লাহর হতে পারে৷ আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেনঃ
وَجَا هِدُوْافِى اللّٰهِ حَقَّ جِهَادِهٖ  ٹ

অর্থঃ তোমরা আল্লাহর পথে জিহাদ কর যে়ভাবে জিহাদ করা উচিত৷(সূরা আল হাজ্জ আয়াত ৭৮)। বস্তুত সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে এবং অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সব ধরনের চেষ্টা শ্রম ও সাধনাই হল জিহাদ৷

জিহাদ ইংরেজি বানান কি?

জিহাদ ইংরেজি বানান হল (Jihad)। 

জিহাদ কত প্রকার ও কি কি?

ইসলামের দৃষ্টিতে জিহাদ তিন প্রকারঃ স্বায়ী নফসের (প্রবৃত্তির) সাথে জিহাদ করা৷ যেমন হযরত মুহাম্মদ (স.) বলেছেনঃ
اَلْمُجَا هِدُمَنْ جَاهَدَنَفْسَهُ فِى طَاعَةِاللّٰهِ

অর্থঃ প্রকৃত মুজাহিদ সে ব্যক্তি যে আল্লাহর আনুগত্য করার ব্যাপারে নিজের নফসের (কুপ্রবৃত্তির) সাথে জিহাদ করে৷ (মুসনাদে আহমাদ)।

এরূপ জিহাদকে রাসুলুল্লাহ (স.) সবচাইতে বড় জিহাদ বলে অভিহিত করেছেন৷ তিনি বদর যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে বলেছেনঃ
رَجَعْنَا مِنَ الْجِهَادِالْاَ صْغَرِ اِلَى الْجِهَا دِالْاَكْبَرِ

অর্থঃ আমরা ছোট জিহাদ থেকে বড় জিহাদেন (কুপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে জিহাদ) দিকে ফিরে এসেছি৷ (কানযুল উম্মাল)।

জ্ঞানের সাহায্যে জিহাদ করা৷ এরূপ জিহাদকে পবিত্র কুরআনে জিহাদে কাবির (বড়) বলা হয়েছে৷ আল্লাহ বলেনঃ
فَلَا تُطِعِ الْكٰفِرِيْنَ وَجَاهِدْهُم بِهٖ جِهَادًا كَبِيْرًا ٥

অর্থঃ সুতরাং আপনি কাফিরদের আনুগত্য করবেন না এবং আপনি কুরআনের (জ্ঞানের) সাহায্যে তাদের সাথে প্রবল জিহাদ চালিয়ে যান৷ (সূরা আল ফুরকান আয়াত ৫২)।

ইসলামের শক্রদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা৷ এটি হলো জিহাদের সর্বোচ্চ স্তর৷ কেউ ধর্মদ্রোহী হয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে আঘাত হানলে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা৷

জিহাদের গুরুত্ব?

জিহাদ ইসলামের একটি আমল৷ জীবনের সকল ক্ষেত্রে দীনের বৈশিষ্ট্যসমূহ রক্ষা করা এবং ইসলামের বিধিবিধান ও অনুশাসন মেনে চলা যেমন একজন মুমিনের দায়িত্ব অনুরূপভাবে দীন রক্ষা করা দীনকে সমুন্নত রাখা ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জিহাদের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করাও তেমনিভাবে তার কর্তব্য৷ 

মূলত শান্তির জন্য জিহাদ৷ বান্দাকে মানবীয় কুপ্রবৃত্তি ও শয়তানের তানের প্ররোচনা থেকে মুক্ত করে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর অনুগত বানিয়ে দেওয়াই জিহাদেন উদ্দেশ্য৷ জিহাদের ফজিলত বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেনঃ
مَا اغْبَرَّتْ قَدَمَا عَبْدٍ فِىْ سَبِيْلِ اللّٰهِ فَتَمَسَّهُ النَّارُ

অর্থঃ আল্লাহর পথে যে বান্ধব দুপায়ে ধূলি লাগে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না৷ (বুখারি)।
Next Post Previous Post