শালীনতা কাকে বলে | শালীনতার গুরুত্ব
শালীনতা অর্থ কি?
শালীনতা অর্থ মার্জিত সুন্দর ও শোভন হওয়া৷শালীনতা কাকে বলে?
কথা বার্তা আচার আচরণ ও চলাফেরায় ভদ্র সভ্য ও মার্জিত হওয়াকেই শালীনতা বলা হয়৷ গর্ব অহঙ্কার ঔদ্ধত্য ও অশ্লীলতা ত্যাগ করে জীবনাচরণের সকল ক্ষেত্রে ইসলামি নীতি আদর্শের অনুসারী হওয়ার দ্বারা শালীনতা অর্জন করা যায়৷ শালীনতার পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক৷ এটি বহু নৈতিক গুণের সমষ্টি৷ ভদ্রতা নম্রতা সৌন্দর্য সুরুচি লজ্জাশীলতা ইত্যাদি গুণাবলির সমন্বিত রূপের মাধ্যমে শালীনতা প্রকাশ পায়৷ অশ্লীলতা হল শালীনতার বিপরীত৷ গর্ব অহঙ্কার ঔদ্ধত্য কুরুচি ও কুসংস্কার শালীনতাবিরোধী অভ্যাস৷ এগুলো থেকে বেঁচে থাকাই শালীনতা অর্জনের উপায়৷শালীনতার গুরুত্ব কি কি?
ইসলাম সৌন্দর্যের ধর্ম৷ এটি সুন্দর সুষ্ঠু ও কুরুচিপূর্ণ জীবনযাপনে উৎসাহিত করে৷ মার্জিত নম্র ভদ্র ও পূত পবিত্র হিসেবে মানুষকে গড়ে তোলা ইসলামি শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য৷ আর লক্ষ্যে শালীনতার গুরুত্ব অপরিসীম৷ বলা যায় শালীনতাই হল ইসলামি সমাজ ব্যবস্থায় মূল ভিত্তি৷ ইসলামি সকল মানুষকেই নম্র ভদ্র ও শালীন হওয়ার নির্দেশ প্রদান করে৷ যেসব কাজ শালীনতাবিরোধী ইসলামে সেসব কাজকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ কেননা অশ্লীল ও অশালীন কাজকর্ম মানুষের মানবিকতা ও নৈতিক মূল্যবোধ বিনষ্ট করে দেয়৷ মানুষ মনুষ্যত্ব হারিয়ে পশুত্বের অভ্যাস গ্রহণ করে৷ ফলে সমাজে অনাচার ব্যভিচার অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে৷![]() |
হিজাব |
মানুষের কুপ্রবৃত্তি ও কামনা বাসনা পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ ভেঙে দেয়৷ যার কারণে সর্বত্র অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়৷ পোশাক পরিচ্ছদ ও চলাফেরায় শালীনতার অভাব অনেক সময় সমাজে অশ্লীলতার প্রসার ঘটায়৷ ইভটিজিং ব্যভিচার ইত্যাদির জন্ম হয়৷ এজন্য ইসলামে নারী পুরুষ উভয়কে পর্দা রক্ষা ও শালীনতা বজায় রাখার জন্য জোর তাগিদ নেওয়া হয়েছে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেছেন আর তোমরা (নারীরা) নিজ গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রাচীন জাহিলি যুগের মতো নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না৷ (সূরা আল আহযাব আয়াত ৩৩)
অতএব বিনা প্রয়োজনে অশালীনভাবে নারীদের বাইরে ঘুরে বেড়ানো উচিত নয়৷ বরং প্রয়োজনে বাইরে গেলে পর্দা ও শালীনতা অবলম্বন করে যেতে হবে৷ পুরুষদের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য৷ তাদেরকেও অবশ্যই অশালীনভাবে সমাজে বিচরণ করতে হবে৷ পূত পবিত্রতা ও শালীনতার অন্যতম বিষয় হল লজ্জাশীলতা৷ লজ্জাশীলতা মানুষকে শালীন হতে সাহায্য করে৷ লজ্জাশীলতার ফলে মানুষ পরকালীন সফলতা লাভ করবে৷ মহানবি (স.) বলেনঃ
اَلْحَيَاءُ خَيْرٌ كُلُّهُ
অর্থঃ লজ্জাশীলতার পুরোটাই কল্যাণময়৷ (মুসলিম)
মহানবি (স.) আরও বলেন اَلْحَيَاءُ شُعْبَةٌمِّنَ الْاِيْمَانِ
অর্থঃ লজ্জাশীলতা ইমানের একটি শাখা৷ (সুনানো নাসাই)
রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেন অশ্লীলতা যেকোনো জিনিসকে খারাপ করে এবং লজ্জাশীলতা যেকোনো জিনিসকে সৌন্দর্যমন্ডিত করে৷ (তিরমিযি)
সুতরাং চলাফেরা পোশাক পরিচ্ছদ কথাবার্তা আচার আচরণ লজ্জাশীল হওয়া প্রয়োজন৷ সর্বাবস্থায় রুচিসম্মত ভদ্র সুন্দর ও মার্জিত গুণাবলির অনুসরণ করার দ্বারা শালীনতা চর্চা করা যায়৷ শালীনতার ফলে মানুষের মান সম্মান সুরক্ষিত থাকে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়৷ অতএব আমরা সকল কাজে শালীনতা রক্ষা করব৷ অশ্লীল ও অশালীন কাজ ত্যাগ করব৷